ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ
ময়মনসিংহে পৃথকভাবে অটোচালক ও রিক্সাচালক খুনের রহস্য উদঘাটন করেছে কোতোয়ালি পুলিশ। পৃথক এই দুই খুনের ঘটনার ৮ ঘন্টার মধ্যে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা পেশায় ছিনতাইকারী। পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা রবিবার দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন।
পুলিশ সুপার জানান, ঈদের দিন ভোরে ময়মনসিংহ নগরীর ডি এন চক্রবর্তী রোডে রিক্সার উপর অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। এর কিছুক্ষণ পর গোহাইলকান্দি পশ্চিমপাড়া রাস্তার উপর রিক্সার পাশে আরেক অনের রক্তাক্ত মৃত দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দের নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ ফারুক হোসেন, এসআই নিরুপম সাপ, এসআই শাহ মিনহাজ উদ্দিন, এএসআই সুজন চন্দ্র সাহা, কং/৪৮০ জোবায়েদ হোসেন উপস্থিত হয়ে ক্রাইমসিন পর্যবেক্ষন, আলামত জব্দসহ প্রাসঙ্গিক কার্যক্রম সম্পন্ন করেন। এ খবর পেয়ে পুলিশ সুপার নিজে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারগণকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলদ্বয় পরিদর্শন করেন এবং ঘটনার রহস্য উদঘাটনসহ খুনের সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন।
পুলিশ সুপারের নির্দেশে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ
তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ভিকটিমঘয়ের পরিচয় সনাক্ত করেন। এর মাঝে একজন নিহত হাবিবুর রহমান। তার বাড়ি সদরের ভাটি বাড়েরার পাড় এবং অপরজন সালেক মিয়া। তার বাড়ি শষ্যমালা। তারা পেশায় পেশায় একজন অটোচালক ও অপরজন রিক্সাচালক।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, দুটি হত্যাকান্ডের ক্রাইমসিন পরিদর্শন, তথ্য প্রযুক্তি ও ঘটনার মোটিভ পর্যবেক্ষন করে পুলিশ নিশ্চিত হয় যে, ঘটনা দুটি একই গ্রুপ কর্তৃক সংগঠিত হয়েছে। পরবর্তীতে ঘটনার রহস্য উদঘাটনে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে শনিবার বিকেলে নগরীর গোহাইকান্দি জামতলা ও কাশর তিন কোনা পুকুরপাড় থেকে পৃথক দুটি হত্যাকান্ডের ৮ ঘন্টার মধ্যে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলো, অনন্ত কুমার দে, মামুন ও কাজী মোঃ মাহিন বাদশা। এদের মাঝে অনন্ত ময়মনসিংহের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজ ও মামুন কমার্স কলেজের ছাত্র। এদের মাঝে অনন্তের বিরুদ্ধে কোতোয়ালী মডেল থানার মামলা নং- ২০ তাং- ০৯-১২-২০২০, ধারা- ১৯৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৯ এ ধারার অস্ত্র মামলা চলমান রয়েছে। অন্য দুই আসামীর বিরুদ্ধেও স্থানীয়ভাবে বিরুপ তথ্য পাওয়া যায় এবং তারা নেশাগ্রস্ত। গ্রেফতারকৃরদের দেয়া তথ্য মতে, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু এবং তাদের পরিধেয় কাপড়ে লেগে থাকা রক্ত মাখা জামা কাপড় উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়েছে বলে পুলিশ সুপার জানান।
তারা উভয় হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। গ্রেফতারকৃতদের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার আরো বলেন, ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে আসামীগণ পূর্বপরিকল্পনা অনুসারে রিক্সা ভাড়া করে কৌশলে তাদের কাঙ্খিত স্থানে নিয়ে একই ছুরি দিয়ে অটোচালক ও রিক্সাচালক দুইজনকে হত্যা করে তাদের সাথে থাকা টাকা পয়সা ছিনিয়ে নিয়ে যায় বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়। তাদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। প্রেস ব্রিফিংয়ে এছাড়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাঃ রায়হানুল ইসলাম, শামীম হোসেন, ফাল্গুনী নন্দী, কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দ, পুলিশ পরিদর্শক যানবাহন ( প্রশাসন) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, ডিআই ওয়ান আল মামুন, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ফারুক হোসেন সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।