বিশেষ প্রতিনিধিঃ
মালয়েশিয়াতে অবস্থানরত একটি বড় ধরনের প্রতারক চক্র দীঘদিন যাবত মালয়েশিয়াতে বাংলাদেশী শ্রমিক পাঠানোর নামে প্রতারনা করে আসছে। আর এই প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে অনেক বাংলাদেশী শ্রমিক সবকিছু খুঁইয়ে এখন দিশেহারা। এই প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশের একটি জনশক্তি রপ্তানীকারক প্রতিষ্ঠান আইনের আশ্রয় নিয়েছে।
একাধিক সূত্র জানায়, মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে অবস্থানকারী প্রবাসী বাংলাদেশী মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ওরয়ে মনির একটি বড় ধরনের প্রতারনা চক্র সৃষ্টি করে ভাল কাজ দেবার কথা বলে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়াতে শ্রমিক নেয়। পরবতীতে বাংলাদেশ থেকে যেসব শ্রমিক নেয়া হয় তাদের পছন্দমাফিক কাজ না দিয়ে সেসব শ্রমিকদের সাথে তারা প্রতারনা করে। এমন ধরনের বেশ কিছু প্রতারনার খবর রয়েছে মালয়েশিয়া পুলিশের কাছে।
মালয়েশিয়াতে অবস্থারত মনির এমন ধরনের বড় একটি প্রতারনা করে বাংলাদেশী জনশক্তি রপ্তানীকারক প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ম্যানেজমেন্ট সাভিস, বনানী,ঢাকার সাথে। সম্প্রতি ম্যাক্স ম্যানেজমেন্ট এর পক্ষ থেকে রাজধানীর বনানী থানায় প্রতারক মনির গং এর নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে ( মামলা নং-৬০২৫(৫)/১।
ম্যাক্স ম্যানেজমেন্ট এর সত্ত্বাধিকারী মো: মাহফুজুর রহমান নিজে বাদী হয়ে এই মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগে জানা যায়, মনির গং পরস্পর যোগসাজস করে মালয়েশিয়াতে শ্রমিক নেবার নামে বাদী মো: মাহফুজুর রহমানের কাছ থেকে ১কোটি ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামী ওহিদুল ইসলাম ওরফে সোহান, মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান এবং মোহাম্মদ সাইদুজ্জামান বাংলাদেশী জনশক্তি রপ্তানীকারক প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ম্যানেজমেন্ট থেকে শ্রমিক নিয়ে থাকে। মনির গং বাংলাদেশের ম্যাক্স ম্যানেজমেন্ট এর সাথে যোগাযোগ করে জানায়, তাদের কাছে ভাল কাজের প্রচুর ভিসা রয়েছে। যেসব ভিসায় বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়াতে ভাল কাজ করতে থেকে শ্রমিক যেতে পারবে।
প্রতারক চক্রের হোতা মনির এমন কিছু ভাল ভিসার প্রলোভন দেখিয়ে ম্যাক্স ম্যানেজমেন্ট থেকে ইসলামী ব্যাংক বনানী শাখার মাধ্যমে (যার চলতি হিসাব নম্ভর ২০৫০৩৯১০১০০০৪১৩০৮) এর মাধ্যমে মোট ১ কোটি বিশ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
টাকা নেবার পর ম্যাক্স ম্যানেজমেন্ট এর পক্ষ থেকে মনির গং এর সাথে শ্রমিক পাঠানোর ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তারা সময় ক্ষেপন করে টালবাহানা করতে থাকে। একপযায়ে শ্রমিক পাঠানোর বিষয়টি নিয়ে প্রতারক চক্রটি নানান অজুহাত তুলে ধরে। বিষয়টি নিয়ে ম্যাক্স ম্যানেজমেন্ট এর সন্দেহ হলে তারা মালয়েশিয়াতে যোগাযোগ করলে মনির গং এর প্রতারনা ধরা পড়ে। পরবতীতে মনির গং এর বিরুদ্ধে মালয়েশিয়া হাইকমিশনে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। এছাড়া বনানী মডেল থানায়ও একটি প্রতারনা মামলা করা হয়। মামলাটি বতমানে তদন্তাধীন রয়েছে। এবিষয়ে জনশক্তি রপ্তানীকারক প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ম্যানেজমেন্ট এর মালিক মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, মালয়েশিয়ার মনির ভাল ভিসা আছে এমন প্রলোভন দেখিয়ে আমার কাছ থেকে এক কোটি বিশ লাখ টাকা নেয়। কিন্তু সে আমার প্রতিষ্ঠানকে ভিসা না দিয়ে বিভিন্ন টালবাহানা করলে তাতে আমার সন্দেহ হয়। আমি মালয়েশিয়াতে খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারি, এই চক্রের কাজই হচ্ছে প্রতারনা করা। জাল ভিসা দিয়ে তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়। পরবতীতে এই বিষয়ে প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়া হাইকমিশন বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেই এবং বনানী মডেল থানায় মনির গং এর বিরুদ্ধে প্রতারনার মামলা দায়ের করি। মামলাটি বতমানে তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানা যায়।