নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ময়মনসিংহের ভালুকায় ৭১ নং কাদিগড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিতর্কিত কর্মকান্ডে জড়িত মাহমুদা পারভীন নামে এক সহকারি শিক্ষকের উপরেই আস্থা রাখলেন উপজেলার বিতর্কিত টিইও সৈয়দ আহমদ। অভিযোগ উঠেছে, উপজেলার ৭১ নং কাদিগড় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত ২০২০ সালে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট ব্যবহার করে একজনকে দাতা হিসেবে উপস্থাপন, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনাকে উপেক্ষা করে গোপনে কমিটি গঠনের পাঁয়তারা, নজিরবিহীন আর্থিক দূর্নীতি, অন্যায়ভাবে অভিভাবকদের ভোটার তালিকার বাইরে রাখা, কেউ কোন কিছু জানতে চাইলে তথ্য অধিকার আইন দেখিয়ে তা পাশ কাটিয়ে যাওয়াসহ নানা গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মাহমুদা পারভীনের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে তাকেই পুনরায় দায়িত্ব প্রদান করেছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সৈয়দ আহমদ।
বিদ্যালয়ের অভিভাবক, দাতা সদস্য ও এলাকাবাসী স্বাক্ষরিত দুই বছর আগের সেই অভিযোগের কোন তদন্ত না করে সেই বিতর্কিত শিক্ষিকা মাহমুদা পারভীনকেই পুনরায় দায়িত্বে বহাল করায় ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকাবাসী।
অভিযোগ রয়েছে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে এলাকাবাসী, শিক্ষক, অভিভাবক, দাতা সদস্যদের আবেদনকে উপেক্ষা করে বিদ্যালয়ের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশকে অস্থিতিশীল করার জন্যই মাহমুদা পারভীনকে দায়িত্ব দিয়েছেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ আহমদ।
২০২০ সালে উপজেলা শিক্ষা অফিসে এলাকাবাসীর দেয়া অভিযোগ থেকে জানা যায়, ওইসময় স্কুলের অর্থনৈতিক কেলেংকারী, কমিটি গঠনে ব্যাপক কারচুপি, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসকে অবমূল্যায়ন, বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট করা, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয় বিমুখ করা সহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত ছিলো মাহমুদা পারভীন। সেই সমস্ত অভিযোগ থেকে বাঁচতে ব্যক্তিগত অসুস্থ্যতার অজুহাত দেখিয়ে গত ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির আবেদন করেছিলো মাহমুদা পারভীন। এরপর তাকে অব্যাহতি দেয়া হলেও গত ৩ বছরে আজও সেইসমস্ত অপরাধের কোন তদন্ত বা শাস্তি নিশ্চিত করতে পারেনি উপজেলা শিক্ষা অফিস।
এমনকি মাহমুদা পারভীন স্থানীয় মেছের আলী নামে এক ব্যক্তিকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দেখিয়ে উপজেলা শিক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবুল কালাম আজাদ সাহেবের কাছে দাতা সদস্যের সুপারিশ করেছিলেন। পরে সেই জালিয়াতি ধরা পড়ায় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবুল কালাম আজাদ তাৎক্ষনিক তা বাতিল করেন।
তৎকালীন শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তারা তদন্ত শুরুর পর বদলী হয়ে যাওয়ার পর বর্তমান ভালুকা উপজেলা শিক্ষা অফিসার সৈয়দ আহমেদ দায়িত্বে আসার পর অনৈতিক সুবিধা নিয়ে মাহমুদা পারভীনের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে মাহমুদার কাছ থেকে বরং পুনরায় দায়িত্ব প্রদান করে তাকে পুরষ্কৃত করেছেন কিনা এই প্রশ্ন এলাকাবাসীর।
অভিযোগ এর ব্যাপারে মাহমুদা পারভীন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি এ ব্যাপারে টিইও সাহেব ভালো বলতে পারবেন বলে জানিয়ে অন্য কোন কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা শিক্ষা অফিসার (টিইও) সৈয়দ আহমদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান ও ভালুকা উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবুল কালাম আজাদ জানান, দাতা সদস্য হিসেবে মনোনয়নের সময় মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট জাল পাওয়ায় তিনি তা বাতিল করে দিয়েছিলেন। কাদিগড় স্কুল নিয়ে অনিয়ম বা দূর্নীতির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান তিনি।