মীর সবুর আহম্মেদ, মুক্তাগাছাঃ
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার ফরিদা বেগম এবং সোহাগ মিয়ার, ২ ছেলের মধ্যে ছোট ছেলে ফরহাদ হোসেন। ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজ এর ডিগ্রী পড়ুয়া ছাএ ফরহাদ। মুক্তাগাছার ঘোগা ইউনিয়নের চারিপাড়ায় বসবাস করতেন। এক বছর আগে হাঁটুতে সমস্যা দেখা দিলে ময়মনসিংহ মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে যান।সেখানে গেলে চিকিৎসক বিভিন্ন টেস্ট করে রোগ নির্ণয় করতে না পেরে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে রেফার করেন। পঙ্গু হাসপাতালে তার সকল ধরনের টেষ্ট করে টিবি রোগ ধরা পরে। আর এতেই ফরহাদের জীবনে দুঃসহ দুঃখ দুর্দশা নেমে আসে! দীর্ঘ ৪ মাস টিবি রোগের ভুল চিকিৎসায় ফরহাদের অবস্থার অবনতি হলে তাকে সুকৌশলে পঙ্গু হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা ডাক্তার একটি টেষ্ট করাতে আবার ময়মনসিংহ মেডিকেলে পাঠিয়ে দেন।
ফরহাদের অসহায় মা ছেলেকে সুস্থ করার আশায় আবার ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেলে ছুটে যান। সেখানকার বোর্ড ডাক্তাররা রিপোর্ট দেখে একজন আরেকজনের দিকে তাকায়। এতে বোঝা যায় ততক্ষণে ফরহাদের পরিনতি ভয়াবহ অবস্থায় চলে গেছে!
ময়মনসিংহ মেডিকেলের সিনিয়র ডাক্তাররা তাদের বুঝিয়ে বলে এখন ফরহাদকে বাসায় নিয়ে যান।
এবং ভালোমন্দ খাওয়াতে থাকেন!!
এরপর মা ফরিদা বেগম কান্নাকাটি করে কিছু একটা করার অনুরোধ করলে তারা আবার ঢাকার মহাখালী ক্যান্সার হাসপাতালে ভর্তি করাতে পরামর্শ দেন। ঢাকায় এসে ডাক্তার টেস্ট করে দেখতে পান ফরহাদের টিবি রোগের কোন অস্তিত্বই ছিলো না। বরং তার হাঁটুতে একটা টিউমারের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। ভুল চিকিৎসায় গতকাল মারা যায় ফরহাদ। ২২ মে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে সকাল ৭টায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ফরহাদ।
হতভাগিনী মা কলিজার সন্তানকে বাঁচাতে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়েছিলেন,তিনি গাবতলী হাইস্কুল(ময়মনসিংহ)এর আয়া হিসেবে কাজ করতেন প্রায় ঊনিশ বছর।
ছেলের চিকিৎসার জন্য ঢাকায় থাকার কারনে ওনার চাকরিটাও চলে গেছে। স্কুল থেকে কোন সহযোগীতা পাননি বলে জানালেন ফরিদা বেগম।