ছাতক প্রতিনিধিঃ
ছাতকের নোয়ারাই ইউনিয়নের লক্ষিবাউর ও কাড়ইল গাঁও গ্রামবাসী মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। রবিবার বিকেলে দু’ গ্রামের লোকজন সংঘর্ষের প্রস্তুতি নিলে থানা পুলিশ ও সহকারি কমিশনার (ভুমি) মোহাম্মদ ইসলাম উদ্দিন ঘটনাস্থলে পৌছে উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছেন। এ দিকে সোমবার সকালে দুই গ্রামের পক্ষ থেকে আবারো সংঘর্ষের ডাক দেয়া হয়েছে বলে স্থানীয় একাধিক সুত্র জানিয়েছে। জানাগেছে বড় নাইন্দাহাওরের একটি বাঁধ নির্মাণ নিয়ে দুই গ্রামের মধ্যে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে হাওরে বাঁধ নির্মাণে বাঁধা দেয়ায় লক্ষিবাউর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম, মকতছির আলী ও বুরহান উদ্দিনকে হাওরে মারপিট করে তাদেরকে বেঁধে নিয়ে যায় কাড়ইল গাঁও গ্রামের লোকজন। গ্রামের সাহিদ আলীর বাড়িতে নিয়েও তাদেরকে মারপিট করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জাহাঙ্গীর আলম।
তাদেরকে ওই বাড়ি থেকে আটক অবস্থায় উদ্ধার করেছেন নোয়ারাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেওয়ান পীর আব্দুল খালেক রাজা, সাবেক চেয়ারম্যান আফজাল আবেদিন আবুল, সালিক মিয়া তালুকদার, রাজু আহমেদ তালুকদারসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিরা। জাহাঙ্গীর আলমকে ছাতক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরাও হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। স্থানীয়রা জানান, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বড়নাইন্দা হাওর চাকুরা গ্রুপ ২২৫ একর জলমহাল ১৪২৫ বাংলা সন হতে ১৪৩০ বাংলা সন পর্যন্ত উন্নয়ণ প্রকল্পের আওতায় ইজারা নেয় লক্ষিবাউর মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি। ওই জল মহালের ভেতর দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করতে কাড়ইলগাঁও গ্রামের লোকজন স্কেভেটর দিয়ে মাটি কাটার কাজ শুরু করে। শনিবার বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ ইসলাম উদ্দিনকে মৌখিক ভাবে অবহিত করেন মৎস্যজীবি সমিতির লোকজন। তিনি এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করতে বলেন। রবিবার সকালে লিখিত অভিযোগ করা হলে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইসলাম উদ্দিন ঘটনাস্থলে তদন্তের জন্য তহশিলদার রমেন্দ্র নারায়ণ দাস ও সার্ভেয়ার আব্দুল্লা আল মামুনকে পাঠান। ওই সময় জলমহালের ইজারাদাররা ও সেখানে গেলে দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ও মারামারি শুরু হয়। এক পর্যায়ে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে কাড়ইলগাঁও গ্রামের লোকজন জড়ো হয়ে মাঠ থেকে ৩ জনকে ধরে নিয়ে যায়। বাড়িতে নিয়ে তাদেরকে মারপিট করা হয়। তিনজন ছাড়া পাওয়ার পর দুই গ্রামের লোকজন সংঘর্ষের জন্য মুখোমুখি অবস্থান নেয়। এ সময় থানা পুলিশ, সহকারি কমিশনার (ভুমি), ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইসলাম, ইউপি চেয়ারম্যান দেওয়ান পীর আব্দুল খালেক রাজা, সাবেক চেয়ারম্যান আফজাল আবেদিন আবুল, ইউপি সদস্য আসাদ আলী সহ লোকজন ঘটনাস্থলে পৌঁছে উপস্থিত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছেন। এ দিকে সোমবার সকালে দুইগ্রামের লোকজন ফের সংঘর্ষের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানাগেছে।
ইউপি সদস্য সাদিক মিয়া, সাবেক সদস্য মনির উদ্দিন জানিয়েছেন সোমবার যাতে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে মারামারি না হয় সে লক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন তারা। বিষয়টি থানা পুলিশকেও অবহিত করা হয়েছে। ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ খান মোহাম্মদ মাঈনুল জাকির জানান, ঘটনার খবর পেয়েছেন তিনি। এ ব্যাপারে পুলিশকে সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়েছে।
সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইসলাম উদ্দিন জানান, হাওরের বাঁধ নির্মাণের বিয়য়টি তদন্তাধীন রয়েছে। এ ব্যাপারে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। যারা এ ঘটনায় আহত হয়েছে তারা থানা বা আদালতে বিচারপ্রার্থী হতে পারেন।সংঘর্ষের ফলাফলতো ভালো হয়না। একদফা সংঘর্ষের বিষয়টি তাদের বারণ করা হয়েছে।