ছাতক প্রতিনিধিঃ
সুনামগঞ্জের ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলার ৭শ ৬০ একর ভূমি নিয়ে হাদা টিলা অবস্থিত। প্রকৃতি ভরা সম্পদে ভরপুর, টিলা মাটির নিচে কোটি কোটি টাকার প্রকৃতি সম্পদ পাথর লুকিয়ে রয়েছে। এ গুলো রক্ষা করতে উপজেলা প্রশাসন দিবা-রাত্রী ভ্র্যাম্যমান আদালত পরিচালনা করে আসছে। তবু ও পাথর খেকোদের আগ্রাসনে হাত থেকে প্রাকৃতিভরা লুকানো সম্পদ রক্ষা করতে পারছে না প্রশাসন।
ছাতক উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের হাদা টিলা অবাধে কেটে পাথর ও গাছ খেকোদের আগ্রাসনে ধবংস হচ্ছে হাদাটিলার পবিবেশ। ফলে এখানে পরিবেশ বিনষ্ট ও ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে বিট ফরেষ্ট বিভাগের বনায়ন প্রকল্প। সামাজিক বনায়ন প্রকল্প ধ্বংস করেছে স্থানীয় একটি সিন্ডিকেট পাথর খেকো ও বৃক্ষ নিধনকারী চক্র এবং কতিপয় অসাধু ফরেষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারী, কিছু স্হানীয় অসাধু ব্যবসায়ীরা মিলে টিলা কেটে পাথর উত্তোলন ও বাগানের গাছগুলো কেঁটে উজাড় করা হচ্ছে। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত স্থানীয় একটি পাথরখেকো চত্রেুর নেতৃত্বে দুই শতাধিক শ্রমিক টিলা কেটে পাথর উত্তোলন করে নৌকা ও ট্রলি যোগে নিয়ে অন্যত্র বিক্রি করছেন।
শনিবার রাতে উপজেলার ভারপ্রাপ্ত ইউএনও ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইসলাম উদ্দিনের নেতৃত্বে হাদা টিলা এলাকা অভিযান চালিয়ে অবৈধ ভাবে ফরেষ্ট বিভাগের জায়গার টিলার মাটি কেটে পাথর উত্তোলন করে আসছে একটি পাথর খেকোচক্র। এ খবর পেয়ে রাতে ভ্রাম্যমান আদালত হাদা টিলা এলাকায় পৌছার সাথে সাথেই মাটিতে পাথর রেখে শ্রমিকরা ঘটনাস্থল থেকে টিলার জঙ্গল দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইসলাম উদ্দিন এসব পাথরগুলো এলাকার জনপ্রতিনিধি, গনমান্য ব্যাক্তিদের উপস্থিতিতে এ পাথর জব্ধ করা হয়।
একটি সূত্রে জানা যায়, ৭শ ৬০ একর ভূমি নিয়ে এই হাদা টিলা। এ টিলা মাটির নিচে কোটি কোটি টাকার পাথর রয়েছে। পুরো টিলা জুড়েই রয়েছেন সরকারি বনায়ন।
ইউক্লিপটার্স, বেলজিয়াম, আকাশীসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৩৩ হাজার বৃক্ষ রোপন করা হয়। কিন্তু কতিপয় ফরেস্টের অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারী, বৃক্ষ নিধনকারী ও পাথর খেকো চক্র মিলে সৃজিত বাগানের গাছ কেঁটে উজাড় করে ফেলে দিচ্ছে। যার ফলে এ প্রকল্প এখনো আলোর মুখ দেখেনি। দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী পাথর খেকো চক্র টিলা কেটে পাথর উত্তোলন করছে। সরকারী কয়েক হাজার মুল্যবান গাছ প্রতিনিয়ত চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে চোরেরা।
দুই শতাধিক শ্রমিক টিলা কেটে পাথর উত্তোলন করে বারকি নৌকা, বাল্কহেড ও ট্রলিগাড়ি পরিমাপে প্রতিদিনই বিক্রি করছে লাখ লাখ টাকার পাথর। ভোরে ও রাতের অন্ধকারে পাথর উত্তোলন করেছেন। এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার মাধ্যমে শ্রমিকদের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করলে ও পাথর খেকো চক্রের মুলহোতারা ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। হাঁদা টিলায় এলাকার মধ্যে কাঁচা আধাপাকা প্রায় ৬৭টি অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে।
এসব বসত বাড়ি থেকে পাথর খেকো চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এব্যাপারে উপজেলার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইসলাম উদ্দিন এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন ফরেষ্ট বিভাগের টিলায় প্রতিনিয়ত গাছপালা কর্তন ও মাটি কেটে পাথর উত্তোলন করেছেন স্থানীয় একটি সিন্ডিকেট চত্রু। কিন্তু ফরেষ্ট বিভাগ কর্মকর্তারা এসব ঘটনায় নিরব রয়েছে বলে তিনি জানান।