কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
মালেকা বেগম। বয়স ৬০এর ঘরে। বছর সাতেক আগে বিধবা হন। চার মেয়ে। সবার বিয়ে হয়ে গেছে। মেয়েরা সবাই যার যার পরিবার নিয়ে আছেন। ফলে অনেকটাই একাকী দিন কাটছে মালেকা বেগমের। অভাব-অনটন আর রোগেশোকে অনেকটাই নিস্তেজ হয়ে গেছেন তিনি। এরই মধ্যে গত বছর শিলাবৃষ্টিতে একমাত্র বসতঘর ফুটো হয়ে গেছে। সব মিলিয়ে কষ্টে জীবনের শেষ দিনগুলো কাটছে তার।
এটি কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চন্ডিপাশা ইউনিয়নের বড়আজলদী গ্রামের মৃত আছির উদ্দিনের স্ত্রীর গল্প।
স্থানীয়দের মাধ্যমে অসহায় ওই নারীর এমন করুণ কাহিনী জানতে পারেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ আতাউল্লাহ সিদ্দিক মাসুদ। এরপরই ছুঁটে যান তার বাড়িতে। রোববার (৪ফেব্রুয়ারি) বিকেলে টিন নিয়ে উপস্থিত হন মালেকার বাড়িতে। ওই নারীর মুখে নিজের অসহায়ত্বের কথা শুনে ঘর মেরামত করে দেওয়ার পাশাপাশি ওষুধপত্র কিনে দেওয়ার আশ্বাস দেন মাসুদ।
জানা গেছে, মালেকা বেগম ডায়াবেটিস, কোমরের হাড় ক্ষয় ও হার্টের জটিলতায় ভুগছেন। এতে তার নিয়মিত ওষুধ সেবন করতে হয়। স্বামী, পুত্র সন্তান কেউ নেই। চার মেয়ে, সবাই বিয়ে করে যার যার সংসারে রয়েছেন। ফলে আর্থিক অভাব-অনটনে দু’চালা একটি টিনের ঘরে অসহায় দিন কাটছে মালেকার। অভাব-অনটনের ফলে নিয়মিত ওষুধ খেতে না পারছেন না। আশপাশের মানুষের সাহায্যে কোনো-রকমে দিন কাটছে তার। এরই মধ্যে গত বছর শিলাবৃষ্টিতে বসতঘরের টিনের চাল ফুটো হয়ে গেছে। টাকার অভাবে সেটা মেরামত করতে পারছিলেন না তিনি। সবমিলিয়ে রোগে-শোকে আর অভাব-অনটনে জীবনের শেষ সময় কাটছে মালেকার। স্থানীয়দের মাধ্যমে ওই নারীর দুর্দশার কথা জানতে মানবিক মানুষ হিসেবে পাশে দাঁড়িয়েছেন আতাউল্লাহ সিদ্দিক মাসুদ। যিনি একই উপজেলার পার্শ্ববর্তী নারান্দী ইউনিয়নের সন্মানিয়া গ্রামের বাসিন্দা। একজন প্রতিষ্ঠিত গার্মেন্ট ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ। রোববার তিনি ওই নারীর বাড়িতে গিয়ে ঘর মেরামত করার জন্য ঢেউটিন তুলে দেন। পাশাপাশি নগদ অর্থ এবং ওষুধপত্রের খরচ বহন করার আশ্বাস দেন।
আতাউল্লাহ সিদ্দিক মাসুদ বলেন, এ সমাজে হাজারো মালেকারা অজান্তেই বিদায় নেয় এই পৃথিবী থেকে। কষ্ট দেখার যেন কেউ নেই। আমি উনার কথা আমার লোকজনের কাছ থেকে জানতে পেরে তার পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। সমাজের বিত্তবানদের এসব অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত বলে মনে করি।
প্রসঙ্গত, আতাউল্লাহ সিদ্দিক মাসুদ তার মৃত বাবা-মায়ের নামে ছমির-হালিমা ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠাতা করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি সমাজের অসহায় মানুষের কল্যাণে কাজ করছেন। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পাশাপাশি হতদরিদ্র মানুষের চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়াসহ বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজ বাস্তবায়ন হচ্ছে ওই ট্রাস্টের মাধ্যমে।