সাব্বির মির্জা, (তাড়াশ) প্রতিনিধিঃ
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে রানীহাট দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগ ছাড়াই দীর্ঘ দুই যুগ ধরে প্রধান শিক্ষকের চাকরি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম ফরিদুল ইসলাম। অবৈধ চাকরির ব্যপারে স্বরল স্বীকারোক্তিও দিয়েছেন তিনি। ( ৫ অক্টোবর) শনিবার ফরিদুল ইসলাম বলেন, চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার মাত্র আট বছর বাকি রয়েছে। এ নিয়ে লেখালেখি করলে সন্মানহানী হবে আমার।
এদিকে প্রধান শিক্ষক ফরিদুল ইসলামের নিয়োগ ও নিয়োগ বৈধকরণের বিষয়ে রানীহাট দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ে গণিত বিভাগের শিক্ষক নুরুল হুদা, কোয়াপ সদস্য জহুরুল ইসলাম ও অভিভাবক সদস্য রফিকুল ইসলামের সমন্বয়ে এক তদন্ত কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন ২০১৯ সালের মে মাসের ১৭ তারিখে। তদন্ত প্রতিবেদনের মন্তবে বলা হয়, “প্রধান শিক্ষক ফরিদুল ইসলামের নিয়োগ ও নিয়োগ বৈধকরণ ভূয়া। এ অপরাধে তার চাকরি করার বৈধতা নেই। শিক্ষক নুরুল হুদা, কোয়াপ সদস্য জহুরুল ইসলাম ও অভিভাবক সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, রানীহাট দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের কোন পরিচালনা কমিটি ফরিদুল ইসলামকে প্রধান শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ প্রদান করেননি। তিনি নোট বুক খাতার পাতায় নিজের হাতে নিয়োগ বৈধকরণের নির্বাচনী পরিক্ষার রেজুলেশন লিখেছেন। বিশেষ করে তার বাবা সিরাজুল ইসলাম কোন মেয়াদেই রানীহাট দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছিলেননা। কিন্তু নিয়োগ বৈধকরণের চুড়ান্ত রেজুলেশনে সভাপতি হিসাবে স্বাক্ষর করেছেন তার বাবা। তদন্ত প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ রয়েছে, “প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বাস্তবায়ন কমিটি সংক্রান্ত তিনটি রেজুলেশনে স্বাক্ষর করেছেন রানীহাট দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি ওসমান গনি।
সর্বপরি রানীহাট দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাত, ক্রয়কৃত প্রশ্ন পত্রে পরিক্ষা গ্রহণ, নিজ বাসায় ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাস তৈরি করে কোচিং বানিজ্য, গাইড বই বানিজ্য, শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের সাথে দুরব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। ২০১৫ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৩২ টি ভাউচারে ১৫ লাখ ৮০ হাজার ৫৫ টাকা বিদ্যায়লের বিভিন্ন ব্যয় বাবদ খরচ দেখানো হয়েছে। কিন্তু কোন খরচের ভাউচার নেই। সমস্ত বিদ্যালয়ের নামের ফটো কপি করা ব্যয় ভাউচারে খরচ দেখানো হয়েছে। “ তিনি যে দোকান থেকে ইট ও বালি কিনেছেন, সেই দোকান থেকেই বিস্কিট কিনেছেন। খাতা, কলমও কিনেছেন ইট ও বালির দোকান থেকেই।
মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম বলেন, রানীহাট দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের চাকরির ফাইল দেখে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও রানীহাট দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি সুইচিং মং মারমা বলেন, অভিযোগের তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।